Follow the stories of academics and their research expeditions
হঠাৎ
করে একদিন এমন মনে হল, পড়াশোনা ঠিকঠাক হচ্ছে না। সবকিছু একটা ট্র্যাক এ আনা
প্রয়োজন। যথারীতি বিষয়গুলো নিয়ে একটা রুটিন করে ফেললে, প্রতিদিন সকাল বেলা দ্রুত
উঠে পড়াশোনা শুরু করে দিবে। এভাবে হয়ত একদিন, দুইদিন…
এক সপ্তাহ! এরপর আবার সব আগের মত অবস্থা। গ্রিক প্রবাদে আছে, তুমি
যা কিছু খরচ করো, তার মধ্যে সময় সবচেয়ে মূল্যবান। আজকে আমরা জানবো, কীভাবে একটি
পরিকল্পনামাফিক সময়সূচি তৈরি করা যায়।
১. একটি নির্দিষ্ট রুটিন নয়, প্রতিদিনের রুটিন প্রতিদিন তৈরি কর
অনেকের
একটা প্রবণতা থাকে, সপ্তাহ বা মাসব্যাপী একটা নির্দিষ্ট রুটিনে চলার। আমরা আসলে
কোনো ডিভাইস না যে আগে থেকে সেট করে রাখা রুটিন অনুসারে প্রতিদিন সব কাজ সেই সঠিক
সময় অনুসরণ করে করতে পারবো। এক্ষেত্রে, একটা কাজ করতে পারো, প্রতিদিন সকালে ঘুম
থেকে উঠার পরে একটা লিস্ট তৈরি করতে পারো সারাদিনে কী কী কাজ করতে চাও।
আমি
যখন এইচএসসিতে ছিলাম, তখন অনেকটা এভাবেই একটা ডায়েরিতে স্টাডি প্ল্যানার লিখে
রাখতাম।
এভাবে
প্রতিটি বিষয় পড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ের পরিকল্পনা করো। প্রতিবেলায় এমন একটা রুটিন
করে সেটা সামনে রেখে পড়া শুরু করো। একটা বিষয় পড়া হয়ে গেলে সেটার পাশে টিক চিহ্ন
দিয়ে দাও। এতে করে পড়াগুলো শেষ হচ্ছে দেখে একটা আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এছাড়াও যেটা
বাদ পড়ে যাবে, সেটা যেহেতু লিপিবদ্ধ করাই আছে, পরবর্তীতে সেটা আগেই পড়ে নেওয়া যাবে।
২. একটি বিষয় পড়ার পরে বিরতি নাও
একটি
নির্দিষ্ট সময় পড়ার পরে এবং পরবর্তী বিষয় শুরু করার আগে ১০-১৫ মিনিট বিরতি নাও।
একটানা অনেকক্ষণ পড়লে মনোযোগ হারিয়ে ফেলতে পারো। তাই অন্য বিষয় শুরু করার আগে এই
বিরতি নেওয়াটা আবারও পূর্ণ উদ্যমে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।
৩. পড়াশোনার উপযুক্ত
পরিবেশ তৈরি করা
একটি
নির্দিষ্ট সময়ে এবং কোলাহলমুক্ত পরিবেশে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পড়ার অভ্যাস গড়ে
তুলতে হবে। একটি খাতা সবসময় সেখানে রাখো। এতে করে পড়ার সময় জটিল টপিকসমূহ লিখে
লিখে পড়তে পারবে এবং আরও ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারবে। পড়াশোনাকে দৈনন্দিন রুটিনের
একটি অংশ বানিয়ে নাও।
৪. যত দ্রুত সম্ভব শুরু করো
প্রতিদিন
অনলাইন বা ক্লাসরুমে ক্লাস করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পড়াশোনা শুরু করে দাও। কারণ,
একটা পড়া ক্লাস থেকে বুঝে এসে যদি না পড়ে রেখে দাও, এভাবে যতদিন যাবে তত ভুলে যেতে
থাকবে। এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ পর পড়তে বসলে দেখবে অনেকটুকুই মনে করতে পারছো না।
তাই ক্লাসের পর যত দ্রুত সম্ভব পড়া শুরু করে দাও। এই অভ্যাসটা স্বল্প সময় এর
পরিবর্তে দীর্ঘ সময় পড়া মনে রাখতে সাহায্য করবে।
৫. সপ্তাহে একদিন রিভিশন এর জন্য সময় বরাদ্দ করো
প্রতিদিন
যে নোটগুলো করবে সেগুলো নিয়ে সপ্তাহে একদিন রিভিশন করতে পারো। যত বেশি রিভিশন
করবে, প্রস্তুতি তত ভালো হবে। নোটগুলো রিভিশন করার সময় সেখান থেকে কী কী প্রশ্ন
হতে পারে সেগুলো নিয়ে চিন্তা করো। এভাবে সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে একশতে
একশ প্রস্তুতি নিশ্চিত করা যাবে।
৬. সময় অপচয় করা যাবে না
প্রতিদিন
যেসব কাজে তোমার অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায় সেটাকে শনাক্ত করো এবং সময় অপচয়ের অভ্যাস
প্রতিনিয়ত কমিয়ে আনো। আমাদের অপ্রত্যাশিত এমন সব ঘটনা ঘটে যখন হয়তো আর সেদিন
পড়াশোনা করা হয়ে ওঠে না। পরবর্তীতে পর্যাপ্ত সময়ে দিয়ে সেগুলো গুছিয়ে নেওয়া
প্রয়োজন।
একটি অভ্যাস নিজের মধ্যে তৈরি করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। পরিকল্পনামাফিক সময়সূচি তৈরি করে সেটাতে সময় দাও। সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা - কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে, মনোযোগী করে, সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, সর্বোপরি ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে একটা বড় লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে।
ই-পেপার লিংকঃ আজকের পত্রিকা, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২
আলভি আহমেদ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, ম্যাথট্রনিক্স
Mon, 09 Jan 2023
Mon, 09 Jan 2023
Leave a comment