Follow the stories of academics and their research expeditions
নোট করার ক্ষেত্রে আসলে কোনো সঠিক নিয়ম বা ভুল নিয়ম বলে কিছু নেই। ব্যক্তিভেদে নোট করার ধরণ, মনে রাখা এবং সেই নোট থেকে বিশ্লেষণ করার ধরণও ভিন্ন হয়। তবে, আজকে নোট করার কিছু কার্যকরী কৌশল নিয়ে আলোচনা করবো, যা তোমাকে অগোছালো পড়ার টপিকগুলোকে অধ্যায়ভিত্তিক একটি সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে সাজিয়ে রাখতে সাহায্য তো করবেই এবং পরীক্ষায় ভালো গ্রেড পেতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
১. হাতে লিখে নোট করা
হাতে
লিখে নোট করা সর্বোচ্চ ইফেক্টিভ একটি টুল। কারণ এতে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশও
নিযুক্ত হয়। এতে করে দীর্ঘ সময় মনোযোগ ধরে রাখা এবং টপিকটি নিয়ে ভালোভাবে চিন্তা
করতেও সাহায্য করে। তাই নোট করার প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন, নোটবুক, কলম, পেন্সিল,
হাইলাইটার ক্লাসে নিতে ভুলো না যেন! ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে কম্পিউটারাইজড
ডিজিটাল নোট করতেও অনেকে পছন্দ করে।
২.
সবকিছু লিখে রাখার প্রয়োজন নেই
ভালো
নোট করতে পারা মানে এই না যে, শিক্ষক ক্লাসে যত কিছু নিয়ে আলোচনা করবেন, তার সবটা
নোট আকারে লিখে রাখতে হবে। ভালো নোট করার জন্য প্রথমে ভালো শ্রোতা হওয়া প্রয়োজন।
আর তাই টপিকটি ক্লাসে বুঝতে পারাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। বেসিক কনসেপ্ট,
নতুন ধারণা, শিক্ষকের বোর্ডে লেখা তথ্য কিংবা ক্লাসে যেসব প্রশ্ন করেন সেটা লিখে
নেওয়া উচিত।
৩.
নোট করার পদ্ধতি পরিবর্তন করো
-
একটি টপিকের শিরোনাম,
সেই কনসেপ্ট এর সাথে নিজের ভাষায় প্রাসঙ্গিক বর্ণনা, প্রাসঙ্গিক চিত্র নোট করে
নাও।
-
অগোছালো পড়াগুলোকে লিংক করার জন্য একটি চার্ট
করে নাও, অর্থাৎ ম্যাপিং পদ্ধতির প্রয়োগ করো। এতে করে খুব সহজেই পড়াগুলো কোন
টপিকের সাথে কোনটা অর্থাৎ সঠিক ক্রমটা রিলেট করতে পারবে।
-
গুরুত্বপূর্ণ ও
তুলনামূলক জটিল টপিককে পয়েন্ট আকারে লিখে রাখো।
-
বর্তমানে ইউটিউব, গুগলে
বেশ ভালো তথ্য, ডায়াগ্রাম এবং নোট করার রিসোর্স পাওয়া যায়। এগুলোর সঠিক প্রয়োগের
মাধ্যমে তোমার নোটকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারো।
৪.
নোট নিয়ে গ্রুপ স্টাডি করা
বেশিরভাগ
শিক্ষার্থীর ক্লাস মিস করে ফেললে সেটার নোট সংগ্রহ বা ক্লাসমেটদের থেকে বুঝে
নেওয়ার একটা প্রবণতা থাকে। কিন্তু গ্রুপ স্টাডির আরও ইফেক্টিভ ব্যবহার করার একটি
মাধ্যম হতে পারে নিজেদের তৈরি নোট নিয়ে আলোচনা করা। এতে করে অন্যের নোট থেকে ভালো
তথ্য সংগ্রহ করা, উত্থাপিত জিজ্ঞাসা কিংবা প্রশ্ন ও পড়াগুলো নিয়ে আরও গভীরভাবে
চিন্তা করতে সাহায্য করা এবং সর্বোপরি, ভালো নোট তৈরির কৌশলগুলোও শিখে নেওয়া
যায়।
৫.
পড়ার সময় নোট করা
ক্লাসে
নোট করার পাশাপাশি পড়ার সময় নোট করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পড়ার সময় বিভিন্ন লেখকের
বই, অনলাইন ক্লাস, গুগল ও ইউটিউবে বিশদ তথ্য বা আলোচনা পাওয়া যায়, যেখান থেকে মূল
পড়ার অংশটা চার্ট আকারে অথবা পয়েন্ট করে লিখে নেওয়া যায়। এতে করে পরীক্ষার আগে সব
পড়া অধ্যায়ভিত্তিক নোট খাতা থেকে রিভিশন করতে সুবিধা হবে। সব তথ্য এক খাতায় গোছানো
থাকবে।
৬.
সূত্রগুলোকে সামারাইজ করা
পরীক্ষায় যেসব গাণিতিক সমস্যাগুলো আসে, সেগুলো সমাধানের জন্য সূত্র মনে রাখাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই শুধু সূত্রগুলো আলাদা একটা খাতায় নোট করে রাখো এবং সূত্রের কোন অংশটা কী নির্দেশ করে সেটাও লিখে রাখো। এতে করে গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধানে তোমার সূত্র প্রয়োগ করতে বেশ সহজ হবে।
নোট করা সময়ের অপচয় নয়। অধিকন্তু এটা তথ্যের উপর ফোকাস করে পড়াগুলো ভালোভাবে বুঝতে, মনোযোগ দিতে, মনে রাখতে কার্যকরী মাধ্যম। আসলে নোট করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে পড়ার উপকরণ এর একটি বোধগম্য তথ্য বিন্যাস করে একটি স্থায়ী রেকর্ড রাখা যাতে পরীক্ষা বা অন্যান্য কারণে ভবিষ্যতে কাজে লাগানো যায়। আর, ভালো নোট করতে পারা একটি স্কিলও বটে!
ই-পেপার লিংকঃ দৈনিক বাংলা, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
আলভি আহমেদ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, ম্যাথট্রনিক্স
Mon, 09 Jan 2023
Mon, 09 Jan 2023
Leave a comment